সংবাদ দাতা :

বাটা, এ্যাপেক্স, লট্টো, জিল্্স ইত্যাদি ব্রান্ডের মত বে-এম্পোরিয়ামও জুতোর একটি ব্রান্ড। প্রায়সব ব্রান্ড জুতোর শো-রুম এখন কক্সবাজারে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এক সময় বাটা-এপেক্স ব্রান্ডের জুতোগুলো মার্কেট দখল করে রাখলেও বর্তমানে অন্যান্য ব্রান্ডগুলোর দিকেও গ্রাহকদের নজর বেশি নিত্য নতুন ডিজাইন এবং টেকসই নিশ্চয়তার কারণে।

এসব ব্রান্ড জুতোর মধ্যে অত্যন্ত নি¤œমানের জুতো বহুল দামে বিক্রি করে গ্রাহক ঠকিয়ে যাচ্ছে বে-এম্পোরিয়াম। ঢাকা-চট্টগ্রামসহ সারা বাংলাদেশের প্রায় সব শহরেই রয়েছে বে-এম্পোরিয়ামের শো-রুম। তাদের প্রতি জোড়া ফরমাল ও ক্যাজুয়াল জুতোর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে দেড় হাজার টাকার এর ঊর্ধ্বে। যদিও বে-এম্পোরিয়ামের জুতোগুলো নন-ব্রান্ডের কম দামি জুতোর চেয়ে নি¤œমানের এবং এক সপ্তাহও ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে না। কয়েকদিন ব্যবহারেই নষ্ট হয়ে যায় জুতোর কালার এবং উঠে যাচ্ছে চামড়াগুলো।

ব্রান্ড জুতো হিসেবে বেশি দাম হলেও ক্রেতারা কিনে নিচ্ছেন টেকসই এর আশায়। তাছাড়া জুতোগুলো বিক্রয়ের সময় বে-এম্পোরিয়ামের শো-রুমের কর্মচারিরা ১ মাসের গ্যারান্টি দিয়ে বলেন- “১ মাসের মধ্যে জুতোর কোন প্রকার ক্ষতি হলে তা ক্রয় মেমোসহ ফেরত প্রদানের সাথে সাথে পরিবর্তন করে দেয়া হবে”। কিন্তু সপ্তাহ না যেতেই চোখ কপালে তুলছে গ্রাহকরা। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কালার এবং ছিঁড়ে যাচ্ছে জুতোর চামড়া। তাদের কথা মত মোমোসহ শো-রুমে ফেরত নিয়ে গেলে সাথে সাথে ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও তারা প্রথমত ১৫ দিনের সময় নিচ্ছে জুতো পরিবর্তন করে দিতে। কিন্তু ১৫ দিন পর যোগাযোগ করা হলে আবার নতুন করে ১ মাসের সময় নেয় এবং বলা হচ্ছে হেড অফিস থেকে এখনো অনুমতি পাওয়া যায়নি। এভাবে ভোগান্তি পোহাচ্ছে গ্রাহকরা।

এতে ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন আর্থিকভাবে। কারণ জুতো পরিবর্তনের জন্য যে সময়টুকু তারা নিচ্ছেন, এই সময়টাতে ব্যবহারের জন্য তাদের আবার নতুন করে জুতো কিনতে হচ্ছে।

কক্সবাজার সদর উপজেলা এলাকার ওসমান গণি ক্ষোভ নিয়ে বলেন, তিনি “বে-এম্পোরিয়াম” থেকে জুতো কিনেছিলেন ১৯৯০ টাকা দিয়ে। সপ্তাহ যেতে না যেতেই জুতোগুলো নিয়ে পড়েছেন তিনি বেকায়দায়। এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে তার এত দাম দিয়ে কেনা জুতো। তাছাড়া তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন এবং নিয়মিত ফরমাল ড্রেসে অফিসে যেতে হয় তাকে। তাই মেমোসহ বে-এম্পোরিয়ামের কক্সবাজার শহরে হাশেম টাওয়ারস্থ শো-রুমে ফেরত প্রদান করে পরিবর্তন করতে গেলে তারা প্রথমত ১৫ দিনের সময় নেয় এবং ১৫ দিনের মধ্যে কোন প্রকার পরিবর্তন করে না দিয়ে আবার ১ মাসের সময় নেয়। এদিকে তাকে ফরমাল ড্রেসে অফিস করতে হয় বিধায় সপ্তাহ’র মধ্যে আবার নতুন করে জুতো কিনতে হয়েছে।

কক্সবাজার সরকারি কলেজ গেইট এলাকার সাঈদুর রহমানেরও অভিযোগ একই। তিনিও বে-এম্পোরিয়াম থেকে জুতো কিনে পড়তে পারেন নি পাঁচ দিনও। পাঁচদিনের মাথায় তাকে জুতোগুলো নিয়ে শো-রুমে ফেরত প্রদান করতে হয় এবং একইভাবে পরিবর্তিত জুতো পেতে হয়রানি পোহাতে হয় তাকেও।

এমন অভিযোগ আরো অনেক গ্রাহকের। গত ৩১ ডিসেম্বর শনিবার তাদের শো-রুমে গিয়ে দেখা যায়, রামু এলাকার সাফিন নামের একজন ক্রেতা জুতো পরিবর্তনের জন্য এসেছেন একই সমস্যার কারণে। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি জুতোগুলো কিছুদিন আগে কিনেছেন এবং কয়েক বার ব্যবহার করে তার জুতোর চামড়া ছিড়ে গেছে।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে তাদের হেড অফিসের টেলিফোন (তাদের ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত- ০২৫৮৯৫১৬৭৭) নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ফোন রিসিভ করেননি। কক্সবাজারস্থ শো-রুমের মোবাইল (০১৭৮৭-৬৭৩৮২৯) নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এতে তাদের কিছু করার নাই। তারা শুধুমাত্র বেতনধারী কর্মচারি, জুতো পরিবর্তনের জন্য তাদের হেড অফিস থেকে অনুমতি পেতে হয়।

এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ক্রেতাগণ।